পুরুষ দের রঙের বৈচিত্র নিয়ে সমস্যা কিঞ্চিৎ। লাল, নীল আর হলুদ - তিনটে
প্রাথমিক রঙ আর তার সাথে মিলিয়ে মিশিয়ে আরো গোটা সাত-আষ্টেক না হয়। মেয়েদের
ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একটু জটিল। একটা রঙ যতই হোক বিদঘুটে, তার কম্পজিসান
হোলই বা ততই জট-পাকানো, মেয়েদের কাছে প্রত্যেকটা রঙের একটা আলাদা আলাদা
গুরুত্ব আছে। সে যাই থাকুক না কেন, পুরুষের দৈনন্দিন জীবনে তা নিয়ে তেমন
মাথাব্যাথা নেই। মাথাব্যাথা তখনি হয় যখন মা, বোন, বউ, পিসি বা মাসি এর
কারণে আমাদের জীবনে বিন-বুলায়ে-মেহেমান এর মত কোন সমস্যার সমাগম হয়।
সে আজ থেকে প্রায় বিশ বছর আগের কথা। স্কুলের শারীর শিক্ষার পরীক্ষা।
আমাদের নেক্সট জেনারেশান এর ছেলে পিলেদের এই বস্তুটির সম্মুখীন হতে হয়নি,
কিন্তু আমাদের কাছে এটা সাক্ষাৎ যমের থেকে কিছু কম ছিল না। যোগব্যায়াম আর
শরীরচর্চা এর পরে অশীতিপর বৃদ্ধ মাস্টারমশায় এর প্রশ্নবাণের সম্মুখীন
- 'ধমনি কেটে গেলে যে রক্ত বেরোয় তার রঙ কি ?' উত্তর টা এক বিশেষ ধরনের
লাল, সেটা মনেই ছিল, কিন্তু হটাৎ কি মনে হোল বললাম,
~ 'রানি কালার'।
মাস্টারমশায় আমার দিকে চশমার ভিতর থেকে বৃদ্ধ ক্লান্ত ঘোলাটে চোখ দুটো বড়
বড় করে তাকিয়ে আছেন আর পিছন থেকে বন্ধুদের মুচকি মুচকি হাসি কানে আসছে।
- 'রানি কালার!! সেটা কেমন রঙ??' আমার পরের উত্তরটা টিপিকাল মৌখিক
পরীক্ষার উত্তরের মত - ভিন্ন ভাষায় একই স্টেটমেন্ট এর পুনরাবৃত্তি।
~ 'ওই রানি কালার এর মতই লাল'।
- 'এই রানি কালার টা তোমায় কে শিখিয়েছে? আমি তো বাপের জন্মে এমন কোন রঙের
নাম শুনেছি বলে মনে পড়ছে না'।
~ 'স্যার, মায়ের মুখে শাড়ি আর লিপস্টিক নিয়ে আলোচনা করার সময় এই রঙ টার
নাম শুনেছি'।
পরীক্ষার সময় মায়েদের স্কুল এ গিয়ে বসে থাকার একটা চল ছিল আমাদের মায়েদের
মধ্যে। অতঃপর গার্জেন কল হোল, একটু আলাদা এই বারে, মানে গার্জেন এর জন্য
গার্জেন কল! স্যার মায়ের সাথে কিছু আলোচনা করলেন, আমি দূরে নিষ্পাপ মুখে
দাঁড়িয়ে থাকার চেষ্টা করলাম যাতে এর এফেক্ট আমার রেজাল্ট এ না আসে। রেজাল্ট
এ প্রভাব পড়েছিল বইকি, উপরি পাওনা ছিল বন্ধুদের সামনে বেইজ্জত হওয়া আর
বাড়ি এসে আবার মা এর বকুনি শোনা।
কিন্তু পাঠকগন তিন সত্যি করে বলুনতো আমার কোন দোষ ছিল কি?
নোটঃ কিছুদিন আগে ফেসবুক এ একটা পোস্ট দেখেছিলাম যে একটা মাল্টিকালার স্পেস
এ ছেলেরা যেখানে ৪-৫ টির বেশি কালার দেখতে পায়না, মেয়েরা সেখানে ২৫-৩০ টা
কালার আইডেন্টিফাই করতে পারে। সেটা দেখতে দেখতেই এই ঘটনাটা মনে পরে গেল।
No comments:
Post a Comment
Hi:-)
Thanks for dropping by. Please leave your mark, it keeps me going :-)